সংবাদ প্রকাশের জেরে কক্সবাজারের মহেশখালী রকিয়ত উল্লাহ নামে এক সাংবাদিককে হাত-পা কেটে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার মহেশখালী থানায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে এবং হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি। ভুক্তভোগী সাংবাদিক রকিয়ত উল্লাহ দৈনিক কালবেলা ও কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক দৈনন্দিন নামে একটি পত্রিকায় কর্মরত আছেন।
রকিয়তের অভিযোগ, রোববার মোবাইল ফোনে হুমকির পর দ্বিতীয় দফায় ডেকে নিয়ে গিয়ে একটি কক্ষে আটকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। পরে তার হাত-পা কেটে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘সুমিতমো’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি অফিসারের দায়িত্বে থাকা মশিউর রহমান (৩৯) নামে এক ব্যক্তি।
মশিউর রহমান বলেন, আসলে আমি প্রথমে হুমকি দিতে চাইনি। ফোনে ২০ মিনিট আমাকে ভুয়া বা উলটাপালটা কথা বলে প্রভাবিত করা হয়েছে। আমার সঙ্গে তখন বিদেশিরা বসা ছিল। তাই একপর্যায়ে রাগ করে কথা বলতে গিয়ে হুমকি স্টাইলের হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় দফা হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সুমিতোমো কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার কাজী মহসিন বলেন, হুমকির বিষয়টি জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি তিনি ঠিক করেননি।
মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সুমিতোমো কোম্পানির সিকিউরিটি অফিসার মশিউরের সঙ্গে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কোনো সম্পর্ক নেই। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অধীনে অনেক কোম্পানি সাপ্লাই বা বিভিন্ন কাজ করে। হয়তো তাদের কোনো কর্মচারী হতে পারে সে। তার দায়ভার আমরা নেব না। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, সাংবাদিককে হুমকি ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. ইউনুস বলেন, সংবাদ প্রকাশে কোনো অসঙ্গতি থাকলে অভিযুক্তরা দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে; কিন্তু সংবাদকর্মীকে হেনস্তা বা আটকিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই। এটা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী। সুমিতোমো কোম্পানির একজন সিকিউরিটি অফিসার সাংবাদিকে হুমকি ও আটকিয়ে রাখার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অপসারণ করার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন করা হবে।