জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে সিনিয়র সাংবাদিক লায়েকুজ্জামানের পৃথক জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকালে জানাজা শেষে ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সহকর্মীরা তাকে চিরবিদায় জানান।
জাতীয় প্রেস ক্লাব, বিএফইউজে, ডিইউজে, ডিআরইউ, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিক পরিষদ, জাস্টিস ফর জার্নালিস্ট, ঢাকাস্থ পটুয়াখালী সাংবাদিক ফোরাম, দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ, ফরিদপুর জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তার মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলী দেওয়া হয়।
এ সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলমসহ ডিআরইউ, বিএফইউজে, ডিইউজেসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও লায়েকুজ্জামানের পরিবারে সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লায়েকুজ্জামানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সভাপতি ও সংসদ সদস্য একে আজাদ বলেন, লায়েকুজ্জামান আর প্রেস ক্লাবে ফেরত আসবেন না। তিনি চিরদিনের জন্য আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। একজন সাংবাদিক যখন চলে যান, তখন তার পরিবারের দায়িত্ব আর কেউ নেয় না। তাদের পরিবারগুলোকে ভালো রাখার জন্য একটি ফান্ড তৈরি করার অনুরোধ জানাচ্ছি৷ আর লায়েকুজ্জামানের পরিবার যাতে ভালো থাকে সেই দায়িত্ব আমি ব্যক্তিগতভাবে নেব। তার কোনো দেনা-পাওনা থাকলে এর দায়িত্ব আমি নেব। আপনারা তাকে মাফ করে দেবেন। আল্লাহ যেন লায়েকুজ্জামানকে জান্নাতবাসী করেন সেই দোয়া করি।
দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, লায়েকুজ্জামান আমার সঙ্গে অনেকদিন কাজ করেছেন। মানবজমিনে তিনি অনেকদিন ছিলেন। তিনি অনেক সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি খবর লিখতেন। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। একজন লায়েকুজ্জামানের মৃত্যু নেই।
লায়েকুজ্জামানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, লায়েকুজ্জামান আমাদের সঙ্গে সাংবাদিক ইউনিয়ন করেছেন। তিনি ইউনিয়নের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। গতকাল দুপুরেও ইউনিয়নে বসে তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। লায়েকুজ্জামানের পরিবারের প্রতি গভীর সমাবেদনা জানাচ্ছি। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, লায়েকুজ্জামান প্রতিদিন প্রেস ক্লাবে আসতেন। আমরা এমন একজন সদস্যকে হারিয়েছি, আমাদের ক্লাবের প্রতিটি সদস্য তার অভাব অনুভব করবে। লায়েকুজ্জামান আপাদমস্তক সাংবাদিক ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলিষ্ট কণ্ঠস্বর ছিলেন। আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। পাশাপাশি তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। লায়েকুজ্জামান আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।
লায়েকুজ্জামানের ভাতিজা মিলন বলেন, আমার কাকা আপনাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি কোনো ভুল-ত্রুটি করলে মাফ করে দেবেন। দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।
এর আগে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কর্মস্থলে বুকে ব্যথা অনুভব করলে সহকর্মীরা লায়েকুজ্জামানকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
রোববার আসরের পর ফরিদপুরের নগরকান্দায় গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে লায়েকুজ্জামানকে দাফন করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।