বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে শবে বরাতের রাতে নিখোঁজ স্কুলছাত্র নাসিরুল ইসলাম নাসিমের (১৫) হাত-পা বাধা বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ পাওয়া গেছে। মুক্তিপণ পাওয়ার পরও তাকে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সোমবার রাতে পার্শ্ববর্তী গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আত্মীয় বাড়ির গোয়াল ঘরে পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় তার ফুফাতো ভাই মাদ্রাসা ছাত্র এনামুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সারিয়াকান্দি থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, নিহতের বাবার আগের জিডি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, নিহত নাসিরুল ইসলাম নাসিম বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের ওয়াজেল মন্ডলের ছেলে। সে ফুলবাড়ি গমির উদ্দিন বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শব-ই-বরাতের রাতে এশার নামাজের পর মোবাইল ফোন নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর নাসিম বাড়ি ফেরেনি। সম্ভাব্য সব স্থানে ছেলের সন্ধান না পাওয়ায় ওয়াজেল মন্ডল পরদিন সারিয়াকান্দি থানায় ডায়েরি করেন। পরে মোবাইল ফোনে দুর্বৃত্তরা তার বাবাকে জানায়, নাসিমকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ ৮০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। ছেলেকে ফেরত পেতে ওয়াজেল মন্ডল বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন।
গত রোববার ওই টাকা নিতে এলে সারিয়াকান্দি থানা পুলিশ বিকাশের দোকান থেকে নাসিমকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে গাবতলীর নেপালতলী ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ফুফাতো ভাই এনামুল হককে আটক করে। তিনি সারিয়াকান্দি সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির ছাত্র। জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল তার মামাতো ভাই নাসিমকে অপহরণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তিতে নিখোঁজের ৮দিন পর সোমবার রাত ১০টার দিকে তাদের তালাবদ্ধ বাড়ির গোয়াল ঘরে মাটি খুঁড়ে নাসিমের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি পঁচন ধরা লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বগুড়ার গাবতলী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াজ মেহেদী, গাবতলী থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ, সারিয়াকান্দি থানার ওসি রবিউল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে সারিয়াকান্দি থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, মুক্তিপণ আদায় করার আগেই নাসিরুল ইসলাম নাসিমকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের বাবার আগের মামলাটি হত্যা ও লাশ গুমের মামলা হবে।