রাশিয়ার প্রবল আক্রমণে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের এক গ্রাম থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র ডিমিট্রো লাইখভি।
সোমবার ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র জাতীয় টেলিভিশনে এসব কথা বলেন। খবর এপির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের তৃতীয় বছরের শুরুতে যুদ্ধক্ষেত্রে জনবল ও অস্ত্রশস্ত্রে রুশ বাহিনী অনেক এগিয়ে রয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জাতীয় টেলিভিশনে বলেন, কিয়েভের সেনারা সর্বশেষ ধাক্কা খেয়েছে লাস্টোককাইন গ্রামে। সেখান থেকে পিছু হটে তারা আশপাশের গ্রামে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
দোনেৎস্ক শহরের কাছে আভদিভকা শহরতলির পশ্চিমে রয়েছে লাস্টোককাইন। চার মাসব্যাপী যুদ্ধের পর ১৮ ফেব্রুয়ারি এই শহরতলি দখল করে নিয়েছিল রাশিয়ার বাহিনী। মস্কোর শক্তিধর সামরিক বাহিনীর কাছে পরাস্ত হয়েছিলেন এখানকার রক্ষীরা এবং ইউক্রেন তাদের সেনা প্রত্যাহার করে অন্যত্র প্রতিরক্ষা স্থাপনের পথ বেছে নিয়েছিল।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তি স্থানীয় কমান্ডার আন্দ্রেই মর্দভিশেভকে উদ্ধৃত করে বলেছে, রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনের বাহিনীকে ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) পেছনে পিছু হটতে বাধ্য করেছেন এবং তারা তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন।
আরআইএ আরও বলেছে, ইউক্রেনের এক গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ রুট লাস্টোককাইনের মধ্য দিয়ে গেছে।
উভয়পক্ষের দাবিকে স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা সম্ভব ছিল না বলে জানিয়েছে এপি।
যদিও বড় ক্ষতি নয়। তবু গ্রাম পরিত্যাগ করা থেকে আন্দাজ করা যায়, যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেন বর্তমানে কী ধরেনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। যুদ্ধের নতুন পর্বে ইউক্রেনের অবস্থা বেশ হতাশাজনক।
ইউক্রেন জানিয়েছে, সেনা ও সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষতি সত্ত্বেও মস্কোর সেনাবাহিনী উন্নত আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে অগ্রসর হচ্ছে এবং একাধিক মফস্বল ও শহর গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।
পশ্চিমা বিশ্লেষকরা বলেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চারটি সমান্তরাল অক্ষ বরাবর রুশ সেনারা জোরালো আক্রমণ করছে। তাদের লক্ষ্য— ইউক্রেননিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক অঞ্চলের পশ্চিমাংশের আরও অভ্যন্তরে প্রবেশ করা এবং এর উত্তরে অবস্থিত খারকিভ অঞ্চলে ঢুকে পড়া।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দোনেৎস্ক অঞ্চলে মস্কো-নিযুক্ত কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, রুশ সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা এক এব্রামস ট্যাংক ধ্বংস করেছে। আরআইএ নভোস্তি বলছে, গত শরতে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েনের পর এই প্রথম একটি এব্রামস ট্যাংক ধ্বংস করা হলো।
রাশিয়া সোমবার ভোরে ইউক্রেনে সাতটি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৪টি ‘শহিদ’ ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী বলেছে, তারা ৯টি ড্রোন ও তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে।