তেঁতে উঠেছে পদ্মাপাড়ের বিভাগীয় শহর রাজশাহী। অগ্নিদহনে যেন বিবর্ণ হয়ে উঠেছে রাজশাহীর সবুজ প্রকৃতি। রুক্ষ আবহাওয়ায় গাছের পাতাও যেন নড়ছে না। টানা দাবদাহে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। এরই মধ্যে শনিবার বিকাল ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় রাজশাহীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। অন্য বছর আবহাওয়ার কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা গেলেও এবার এপ্রিলের শুরুতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে রাজশাহী। আগুনের লেলিহান শিখার মতোই যেন গরম বাতাস শরীরে বিঁধছে। টানা কয়েক দিনের আগুনঝরা তাপমাত্রায় হাঁপিয়ে উঠেছে শ্রমজীবী মানুষ।
রাজশাহীর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এ বছর মৌসুমের শুরুতেই মাঝারি তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে রাজশাহী অঞ্চলে। ফলে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণিকুলে।
এদিকে তীব্র রোদ ও গরমে রমজানের রোজাদারদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। গত কয়েক দিন ধরে দিনে-রাতে ৮/১০ বার করে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। তাপপ্রবাহের কারণে দুপুরের পর প্রধান প্রধান সড়ক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। অনেক মানুষকে ক্লান্ত শরীরে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া অন্য পেশার মানুষ।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যক্ষেক আনোয়ারা জানান, শনিবার বিকাল ৩টায় সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ৩৯, বুধবার ৩৭, মঙ্গলবার ৩৭ দশমিক ৫ ও সোমবার ছিল সর্বোচ্চ (দেশের মধ্যে) ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত তিন দিন থেকে রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহীর ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে। এটি কয়েক দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া আরও অন্তত ৩-৪ দিন তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এ সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।