রাজধানীর মিরপুরে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও খাবার হোটেল। এসব রেস্টুরেন্টের বেশিরভাগই রয়েছে অগ্নিঝুঁকিতে। রেস্টুরেন্টগুলোতে রান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার ও ইলেকট্রিক চুলা ব্যবহৃত হলেও অধিকাংশের নেই সরকারি কোনো অনুমোদন। ফায়ার সেফটি লাইসেন্স কিংবা সরকারি কাগজপত্র ছাড়াই বছরের পর বছর চলছে এসব রেস্টুরেন্ট।
শুক্রবার সরেজমিন মিরপুর ১, ২, ১০, ১১, ১২, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, দারুসসালাম, গাবতলী, ভাসানটেক ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মিরপুর ১০ নম্বর থেকে মিরপুর ১২ নম্বর পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক রেস্টুরেন্ট। এসব রেস্টুরেন্ট বেশিরভাগ গড়ে উঠেছে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও বহুতল ভবনে।
মিরপুর ১২ নম্বরের এ ব্লকের ৭ নাম্বার রোডের ৪৫ নাম্বার ভবন। নয়তলা ভবনটি কেএপসি বিল্ডিং নামে পরিচিত।ভবনটির নিচতলা থেকে নয়তলা পর্যন্ত কাঁচ দিয়ে ঘেরা। ভবনটির চারপাশের দেয়াল কাঁচ দিয়ে বানানো হয়েছে। নয়তলা ভবনটির প্রত্যেকটি ফ্লোরে রয়েছে নামিদামি রেস্টুরেন্ট।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনটি অগ্নি-ঝুুঁকিপূর্ণ। ভবনটির নিচতলা থেকে নয়তলা পর্যন্ত কোনো অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দেখা যায়নি। ভবনটিতে জরুরি বহির্গমনের জন্য আলাদা কোনো পথ বা সিঁড়ি নেই। ভবনটির নয় ও দশ তলার রেস্টুরেন্ট পস লাউঞ্জে গিয়ে দেখা গেছে, রান্নার জন্য কিচেনে বড় দুটি গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। প্রবেশপথের রাস্তা সরু। পস লাউঞ্জের সহকারী ম্যানেজার রাকিব বলেন, আমরা রান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করি। নিচে সিলিন্ডার রাখার জায়গা নেই। তাই কিচেনের পাশেই গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হয়।
ফায়ার সেফটি লাইসেন্স রয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে ম্যানেজার মেহেদী হাসান বুলবুল ভালো বলতে পারবেন।
এদিকে মিরপুর ১২ নম্বরে সাফুরা ট্রেড সিটির ১০ম তলায় গিয়ে দেখা গেছে, এখানে ১০টি ফুড কোর্ট রয়েছে। প্রত্যেক ফুড কোর্টের কিচেনে গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। ভবনটিতে কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ও শোরুম রয়েছে।
সাফুরা ট্রেড সিটির ম্যানেজার হুমায়ুন কবির বলেন, এখানে আন্ডারগ্রাউন্ডে সিলিন্ডার রাখার জায়গা নেই। সবাই কিচেনে ৩৫ কেজি ওজনের সিলিন্ডার ব্যবহার করেন। অবশ্য কোথাও আগুন লাগলে এই ভবনে ২-৩টি সিঁড়ি রয়েছে। মানুষ সহজে নামতে পারবে।
মিরপুর ১২ নম্বর কেএফসি ভবনের মালিকের প্রতিনিধি আরিফ বলেন, বেইলি রোডের ঘটনার জন্য ভবন মালিকরা আরও সচেতন হয়েছেন। সবাই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। আমাদের ভবন অগ্নি-ঝুঁকিপূর্ণ কি না, তা দেখার জন্য ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়েছে। এই ভবনে কোনো ত্রুটি আছে কি না- তা পরীক্ষা করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এখানে বেশিরভাগ রেস্টুরেন্ট নতুন। ২ মাস আগে সবাইকে বলা হয়েছে যেন ফায়ার সেফটি লাইসেন্স নিয়ে নেয়। যতটুকু জানি লাইসেন্সের জন্য সবাই আবেদন করেছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আরিফ বলেন, পস লাউঞ্জের কিচেনে গ্যাস সিলিন্ডার থাকার কথা না। যদি থাকে নামিয়ে ফেলব।