বাংলার লোকসংস্কৃতি আর গ্রামীণ কুটিরশিল্পের একটি বড় জায়গা দখল করে রয়েছে। বাংলার প্রবাদে— গল্প, গানে কিংবা কবিতায় অমর হয়ে আছে নকশিকাঁথা। জসীমউদ্দীনের রূপাই-সাজুর প্রেমের অমর আখ্যানের সাক্ষী সেই কারুশিল্পকেই এবার পোশাকে ফুটিয়ে তুললেন মনামী ঘোষ।
এককথায়, বাংলা ফিল্মফেয়ারের লালগালিচায় আগুন ঝরালেন অভিনেত্রী। মনামী বরাবরই ফ্যাশন সচেতন। পশ্চিমী হোক কিংবা ট্র্যাডিশনাল— কোন পোশাক কীভাবে ক্যারি করতে হয়, তার ভালোই জানা। তিনি যেমন শাড়িতে আদ্যোপান্ত বঙ্গনারী হয়ে উঠতে পারেন, তেমনই বিকিনিতেও সমান স্বাচ্ছন্দ্য। তবে এবার পাশ্চাত্যের সঙ্গে ঐতিহ্যের মিশেলে ফ্যাশনের নতুন সংজ্ঞা তৈরি করলেন মনামী ঘোষ।
সাদা ভিক্টোরিয়ান স্টাইলের গাউন। আর সেই গোটা পোশাকে বাংলার কারুশিল্প ফুটে উঠেছে। নকশিকাঁথা বা কাঁথা স্টিচের কাজ বরাবরই ভীষণ ট্রেন্ডিং। সাধারণত শাড়ি, ব্লাউজ, জামা কিংবা বিছানার চাদরেই দেখা যায় কাঁথা স্টিচের কাজ। তবে এবারের ফিল্মফেয়ারের জন্য গাউনের ওপর বাংলার সেই ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প ফুটিয়ে তুলেছেন মনামী ঘোষ।
শুক্রবারই অবশ্য শেষমুহূর্তের ঝলক দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সাদা গাউনের ওপর লাল সুতোয় ফুটে উঠেছে নকশিকাঁথা। মনামী ঘোষের ফিল্মফেয়ার লুকে নজর কাড়ল লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা তার বিনুনি। হাতের ব্যাগেও কাঁথা স্টিচের কাজ। পোশাকের সঙ্গে কন্ট্রাস্ট রেখে লাল রঙের ব্যাগ নিয়েছেন অভিনেত্রী।
মনামীর মন্তব্য— “এটা নকশিকাঁথা। আমার পোশাকে বাংলার নকশিকাঁথা তুলে ধরেছি। পাশ্চাত্যের সঙ্গে ঐতিহ্যের মিশেল বলা যায়। গাউনটা পশ্চিমী পোশাক হলেও, তার ওপর আমাদের বাংলার নকশিকাঁথার কাজ করা। লাল ফিতে দিয়ে কলা বিনুনি স্টাইলে চুলও বেঁধেছি।”
আর শেষপাতে অভিনেত্রী দেখালেন তার খোলা পিঠে আঁকিবুকি করা নকশিকাঁথার গল্প। যেখানে লেখা— “অটুট সেই না বলা কথা। মনের আবেগের জমানো ব্যথা, আঁকে আর লিখে শোকগাঁথা, কত স্বপ্ন দিয়ে বোনে নকশি কাঁথা… ।”
প্রতিবারই ফিল্মফেয়ারের রেড কার্পেটে চমক দেন মনামী ঘোষ। কখনো ঢাকাই জামদানি ড্রেসে দেখা গেছে, আবার গতবার মিরর ড্রেসে ধরা দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। আর এবার তার ফ্যাশনে বাংলার ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প নকশিকাঁথা।