চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ১০ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটির বিরুদ্ধে এবার জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তার অনুসারীরা ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি প্লটে মসজিদ তৈরির নামে সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। এ ঘটনায় হালিশহর থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জামিলুর রহমান। হুরে আরা বেগম বিউটি চসিকের ১১, ২৫ ও ২৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলরের দায়িত্বে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ওয়ারিশ সনদ দিতে ঘুস নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় হালিশহর থানাধীন বি-ব্লকের একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্লটে ‘হালিশহর বি ব্লক (নতুন সাইট) জামে মসজিদের’ নামে সাইনবোর্ড দেওয়া হয়। সেখানে সভাপতি হিসাবে মো. নাসির আহাম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আলী আকবরের নাম রয়েছে। তবে এ সবকিছুর নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় নারী কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটি। সম্প্রতি হালিশহর বি-ব্লক (নতুন সাইট) সমাজকল্যাণ পরিষদ নামে একটি কমিটি করেছেন বিউটি। সেই কমিটিকে দিয়ে তিনি প্লটটি দখল করার পাঁয়তারা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বিকালে সেই প্লট থেকে জামিলুর রহমানের কেয়ারটেকারকে বের করে দেন কাউন্সিলরের ভাই সোহেল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মসজিদের জন্য সাইনবোর্ড দেওয়া প্লটের কয়েকশ’ গজের মধ্যে অন্তত চারটি মসজিদ রয়েছে। এগুলো হলো, হযরত ফারুক-এ আজম (রা.) জামে মসজিদ, হযরত শাহ সুফী আফজাল ফকির (রহ.) জামে মসজিদ, আকবর আলী জামে মসজিদ ও বি ব্লক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ।
ভুক্তভোগী জামিলুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ থেকে বরাদ্দ পাওয়ার পর কিস্তির টাকা জমা দেওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি সমাধানের জন্য উচ্চ আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে সমাধানের পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে কাউন্সিলরের ভাই সোহেলের নেতৃত্বে মো. বেলাল হোসেন, আলী আকবর ও নাসির মসজিদের নামে প্লটটি দখল করার পাঁয়তারা করছে। তারা আমার কেয়ারটেকার আকতারকে বের করে দিয়েছে।’
হালিশহর থানার ওসি মো. কায়সার হামিদ বলেন, ‘ব্যক্তিমালিকানাধীন প্লটে মসজিদ তৈরির নামে সাইনবোর্ড দিয়েছে বলে জামিলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ দিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। তবে জায়গা-সম্পত্তির বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে পুলিশ।’
এর আগে ওয়ারিশ সনদ দিতে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ ওঠে সংরক্ষিত কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটির বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলর কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম। কাউন্সিলর কার্যালয়ের দুই অফিস সহায়ক জসিম ও শাহেদ ঘুস নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে ওই সময় দুদক জানিয়েছিল।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে হুরে আরা বেগম প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে পরে কথা বলবেন বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।