পালিয়ে বিয়ের পাঁচ বছর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নেওয়ায় এবার সন্তানকে সঙ্গে করে বিশাল মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বরযাত্রী হয়ে শ্বশুরালয়ে গেলেন যুবক। একই ধরনের পোশাকে বরের সঙ্গে চার বছরের ছেলেসহ ১৬৩ জন বরযাত্রী নিয়ে যান ওই যুবক।
বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া অভিনব এ বিষয়টি নিয়ে এলাকার যুবকদের মধ্যে নানা মুখরোচক আলোচনা চলছে। ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। সন্তানের সঙ্গে বরযাত্রীর ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
জানা গেছে, পরিবারের মত না থাকায় খাদিজা আক্তার সেতুকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন মো. এনায়েত হোসাইন (৩০)।
এনায়েত ওই গ্রামের মোতালেব মাতুব্বরের ছেলে। আর তার সহধর্মিণী খাদিজা আক্তার একই গ্রামের কুদ্দুস মাতুব্বরের মেয়ে। বিয়ের সময় পার্শ্ববর্তী সাড়ুকদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন খাদিজা।
আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শহিদুল হাসান খান সোহাগ জানান, বিয়েটা হয়ে গেলেও মেনে নেয়নি শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এ যুগলের কোলজুড়ে আসে সন্তান মো. সামি। তবুও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ক্ষোভের বরফ গলেনি। উলটো কনের পরিবারের করা মামলায় ২০২২ সালে ২৫ দিন জেলও খাটতে হয় এনায়েতকে। পরে জামিন পান তিনি। এর মধ্যে ফরিদপুর শহরে ‘নিউ লাইফ’ নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ব্যবস্থাপকের চাকরি পান এনায়েত। পরে হাসপাতালটির মালিকানা কিনে হয়ে যান পরিচালকও।
সোহাগ আরও বলেন, এভাবে চলার পাঁচ বছর পর আমার মধ্যস্ততায় সমাধান হয় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে। ওই বিয়ে মেনে নেয় মেয়ের পরিবার। অবশেষে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ধুমধাম করে আয়োজন করা হয় এই দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠানের।
এনায়েত বলেন, আসলে অনেক কষ্টের পরে আমাদের বিয়ে মেনে নিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অনেক কষ্ট ও সাধনায় গড়া আমাদের ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় অনেক আনন্দিত আমি। আমার ইচ্ছা ছিল মানুষকে এটা প্রমাণ করে দেখাব ধৈর্য ধরলে ভালোবাসার জয় একটা সময় হয়। সেটার প্রমাণ দেখাতে পেরে আমি আজ সত্যিই গর্বিত।