বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) নির্বাচন সামনে রেখে প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে বিজিবিএর মেম্বার মিট আপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে গার্মেন্ট ও বায়িং হাউস সেক্টরের ব্যবসায়ীদের মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
রাজধানীর হোটেল রেডিসনে মঙ্গলবার রাতে এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিজিবিএ সদস্য ও বায়িং হাউস সেক্টরের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের কো-অর্ডিনেটর আবদুল হামিদ পিন্টু বলেন, বিশ্বব্যাপী মন্দা চলছে। ব্যবসা নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। এমতাবস্থায় দেশের অর্থনীতিকে মজবুত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে শক্তিশালী বিজিবিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিজিবিএর সদস্যদের সিআইপি মর্যাদা না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গার্মেন্ট মালিকরা প্রটোকল নিয়ে বিমানবন্দর পার হন। বায়িং হাউস ব্যবসায়ীদের অর্থনীতিতে এতো অবদান সত্ত্বেও আমরা প্রটোকল পাই না। আমরাও সিআইপি প্রটোকল চাই, এটা আমাদের অধিকার।
অনুষ্ঠানে প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের প্রার্থী উইকিটিক্স বিডির সিইও একেএম সাইফুর রহমান ফরহাদ বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে বায়িং হাউস সেক্টরের অবদান বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার। অথচ আমরা ব্যবসায়ীরা আমাদের প্রাপ্য অধিকার ও মর্যাদাটুকু পাচ্ছি না। কারণ আমাদের প্লাটফর্ম নড়বড়ে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনা এখন সময়ের দাবি। আসছে বিজিবিএর নির্বাচনে প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স বিজয়ী হলে ব্যবসায়ীদের অধিকার ও মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে।
তিনি বলেন, বিজিএমইএর ভবন আছে। আমাদের নিজস্ব ভবন নেই। আমরা স্বপ্ন দেখি বিজিবিএও নিজস্ব ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রায় দুই দশক আগে বিজিবিএ প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচন এতোকাল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়নি। এবার বিজিবিএর সদস্যরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। এতে সংগঠন গতিশীল হবে।
বক্তারা বলেন, বিজিবিএর সদস্য সংখ্যা ১৮০০। বিজিবিএর সদস্য পদ পেতে ব্যবসায়ীদের বহু কাঠগোড় পোহাতে হয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব নির্বাচন না হওয়ায় এমনটি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেক যোগ্য লোক থাকা সত্ত্বেও বিজিবিএতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়; এটি লজ্জার। প্রতি দুবছর অন্তর অন্তর এখানে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে। তাহলেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি তৈরি হবে।
দীর্ঘ ১২ বছর পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে বিজিবিএর নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের প্রার্থীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। তারা নির্বাচিত হলে গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি ও বায়িং হাউস ব্যবসায়ীদের কল্যাণে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
উল্লেখ্য, বিজিবিএর দ্বিবার্ষিক নির্বাচন ২০২৪-২০২৬ আগামী ২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। সদস্যরা ভোট দিয়ে ১৫ জন পরিচালক নির্বাচন করবেন। দুটি প্যানেল থেকে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের প্রার্থীরা হচ্ছেন— কেএফএস ফ্যাশনের আবদুল হামিদ পিন্টু, উইকিটেক্স বিডির একেএম সাইফুর রহমান ফরহাদ, সিমেক্স ডিজাইনারের এনায়েত হোসেন, এফএইচএল নিটওয়্যারের জোবায়েদ বিন ওবায়েদ, এসএমএস মুড লিমিটেডের সাইফুল হক, কবির হোসেন, আরমান মল্লিক, সাইফুন মোস্তাফিজ, রোমান মিয়া, জামিরুজ্জামান, আবদুল্লা আল মামুন, এনামুল কবির, মাহবুব হাসান, আবদুল্লাহ আল মামুন, কামরুল হাসান।