তরিক শিবলী :টঙ্গীতে কাউন্সিলরের ছত্রছায়ায় মজিবর রহমান ওরফে চাউল মজিবর শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গাজীপুর মহানগর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন ৫৭ নং ওয়ার্ড টঙ্গী বাজারের।আজ্বী মজিবর রহমান ওরফে চাউল মজিবর ক্ষুদ্র চাউল ব্যবসায়ী থেকে বনে বসেছেন শিল্পপতি মজিবর। এ যেন আলাদিনের চেরাগ তার হাতে। গাজীপুর মহানগর ৫৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন সরকার এর ঘনিষ্ঠ সহচর হিসাবে কাজ করতেন।
কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার আওয়ামীলীগ এর আমলে ৫৭ নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ছিলেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সন্ত্রাসী মজিবরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। চাঁদাবাজ মজিবরের নামে রয়েছে পূর্বের ও বর্তমানের অনেক মামলা। ৫ আগস্টের পূর্বে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে ছিল তার সোচ্চার ভূমিকা।
সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন সরকারের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা এই মজিবর গিয়াস উদ্দিনের হাত ধরে তিনি হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।তবে কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংযুক্ত হওয়ার কথা লোক মুখে শুনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে কাউন্সিল গিয়াস উদ্দিন সরকারের সাথে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয়েছে প্রতিবেদককে। তিনি কোনভাবেই গণমাধ্যমের সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টঙ্গী বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, মাত্র ১৫ বছর আগে মজিবর অল্প কিছু চাল নিয়ে ব্যবসা করতেন। কাউন্সিলর আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন সরকার ও আওয়ামী লীগের বল ব্যবহার করে, তিনি টঙ্গী বাজার চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন। এরপর তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি।বর্তমানে মজিবর রহমান ওরফে চাউল মজিবর হাজার কোটি টাকার মালিক। অনুসন্ধানে আরো জানা যায় মজিবর টঙ্গী বাজারে সিকিউরিটি গার্ডের নামে প্রতি শনিবার রাতে সাপ্তাহিক কাপড়ের বাজারের প্রতিটি দোকান থেকে টাকা উঠাতেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথম সারির পত্রিকা যুগান্তর সহ বেশ কিছু জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে তিনি কিছু দিন টাকা উঠানো বন্ধ রাখেন। মজিবরে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে এসে,বের হয়ে আসছে কেঁচো খুঁড়তে সাপ। টঙ্গী বাজারসংলগ্ন এলাকায় ছয়টি বাড়িতে পাওয়া গেছে তার নয়টি ফ্ল্যাট, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। হয়েছেন টঙ্গী বাজারের সবচেয়ে বড় চালের আড়তদার।
অধিকতর অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া যায় তার বিশাল বড় পেটায়া বাহিনী, যে বাহিনীর মাধ্যমে টঙ্গী বাজারের বিভিন্ন জায়গা দখল ও ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা তিনি করতেন। টঙ্গীতে জায়গা দখল, জমি ক্রয়-বিক্রয় ও জমি ও ফ্ল্যাটের শেয়ার বিক্রি ব্যবসায় তার উপরে আর কেউই ছিল না। ৩০০ কোটি টাকার ফ্ল্যাট বিক্রি করে গ্রাহকদের আর তার ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। মজিবরের ভয়ে তারাও আর ফ্ল্যাট দখল করতে আসেনি। টঙ্গী বাজারের যে কোনো বিচার-সালিশে তার অবস্থান ছিল সরগরম। সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য প্রমাণ করত অর্থের বিনিময়ে। তৎকালীন থানার ওসি ও পুলিশ ছিল তার নিজস্ব বাহিনী। তাই বলা যেতে পারে, টঙ্গী বাজারের ব্যবসায়ীরা ছিল এই মজিবরের কাছে জিম্মি।
এ বিষয়ে ফয়সাল হাসান (নামটি রূপক অর্থে ব্যবহার করা হলো নিরাপত্তার স্বার্থে) বলেন, শুধুমাত্র টঙ্গী বাজারের ব্যবসায়ীদের চাঁদার টাকাতেই তিনি এখন বিশাল বড় শিল্পপতি। আমাদের এই বাজারে কারো নামে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি কিন্তু তিনি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি কার্যকলাপে ছিলেন বলেই তার নামে মামলা হয়েছে এবং তিনি পলাতক আছেন। কথিত আছে, মজিবরের নামে মামলা হওয়ার পর টঙ্গী বাজারে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। টঙ্গী বাজারবাসী এই মামলা হওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ।
এ বিষয়ে মজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।