স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব আমার, কিন্তু রোগীর ভালো সেবা দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। আমার যেমন চিকিৎসকদের প্রতি দায়িত্ব আছে, তেমনি রোগীদের প্রতিও সমান দায়িত্ব আছে। এই দুই দায়িত্বই আমি নিচ্ছি তবে, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা থেকে কোনো রোগী যেন বঞ্চিত না হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডা. শহিদ মিলন অডিটোরিয়াম হলে বুধবার দুপুরে নর্থ আমেরিকা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের যৌথ আয়োজনে ডোনেশন অব মডার্ন হেলথ কেয়ার ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড হ্যান্ডস অন ট্রেইনিং শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের বেড সংখ্যা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাত দিয়ে ৫ বেডের বার্ন ইউনিট শুরু করেছিলাম, তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে ৫০০ বেডে উন্নীত করেছি। চেষ্টা থাকলে সবই করা সম্ভব। এভাবে, সবার সহযোগিতা পেলে আমরা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মান অবশ্যই উন্নত করতে পারব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা যে পরিমাণ পরিশ্রম করেন তাদেরকে আমি মনে করি নোবেল দেওয়া উচিত। হাজার হাজার রোগীকে দিনরাত অক্লান্ত সেবা দিয়ে এই চিকিৎসকরা সুস্থ করে তোলেন। চিকিৎসকদেরকে এই কৃতিত্ব অবশ্যই দিতে হবে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে, নর্থ আমেরিকা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ব্যক্তি পর্যায়ে চিকিৎসা সামগ্রী দেওয়া হয়।
এদিকে দুপুরে শাহবাগে বারডেম হাসপাতালে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অন্য আরেকটি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্যে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীব্যাপী ডায়াবেটিস দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর ৭ মিলিয়ন করে নতুন রোগী তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস আক্রান্তের হার দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ডায়াবেটিস রোগী আছে। ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশে ২ কোটি ২০ লাখ হতে পারে ডায়াবেটিস রোগী। এর বাইরে, বর্তমানে দেশে ৫০ ভাগ মানুষ জানেই না তাদের ডায়াবেটিস হয়েছে। ইদানিং গ্রামের মানুষদেরও ডায়াবেটিস হচ্ছে যা আমাদের ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহুর্তে সবার আগে প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি করা। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে, স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনের অভ্যেস করতে হবে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক মো. সাইফুদ্দিন, ডা. অরুপ রতন সহ অন্যান্য বক্তারা বক্তব্য রাখেন।
সভায় মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান।