নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরায় গোপালগঞ্জের নাম ভাঙ্গিয়ে এমএলএম ব্যবসা করে বিশ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে। এছাড়াও একই ব্যবসার পার্টনারকে নারী দিয়ে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে উত্তরা পশ্চিম থানায় দিয়েছেন মামলা। এবিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ মো: হাসান মিয়া জানান,”মোঃ হারুন শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।”
অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার হোগলাকান্দি হওয়ায় গোপালগঞ্জের নাম ভাঙ্গিয়ে উত্তরার এক নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর বাড়িতে দির্ঘদিন যাবত এমএলএম নামক প্রতারণা ব্যবসা করে আসছে এই কামাল হোসেন। এর আগেও আদম ব্যবসার আদলে প্রতারণা করে চার কোটি টাকা নিয়ে নিজ গ্রামে চলে যান তিনি। এঘটনায় স্থানীয় চেয়ারম্যান দ্বারা সালিশি বৈঠকে ধামাচাপা দেওয়া হয় ঘটনা।
একাধিক বিয়ে করেও রেখেছেন একাধিক গার্ল ফ্রেন্ড।সময় পেলেই প্রতারণায় উপার্জিত অর্থ ও সুন্দরী মেয়ে নিয়ে চলে যান দেশের বাইরে।কলেজ লাইফ থেকে ডিগ্রী লাভ করলেও আপাদমস্তকে একজন প্রতারক হিসেবেই খ্যাত এই কামাল হোসেন। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ হাতিয়ে মাঝে মাঝে গা ঢাকা দিয়ে থাকেন । সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরা থেকে বিশ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছে একই কোম্পানির পার্টনার আব্দুল কাদের হাওলাদার ও হারুন শেখ।
কোম্পানির মেইন তিনজন পার্টনার মিলে এগ্রো ও সুপারসপ বেইজ ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু করলেও কিছুদিন পর নতুন করে যোগ দেয় “ব্রাইট ফিউচার হোল্ডিংস লিমিটেড’র তালিকাভুক্ত লিডার মোসাঃ ফাতেমা বেগম, মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, মোঃ রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার, মোঃ দুলাল মিয়া, শেখ জাহাঙ্গীর, আরো অনেকে, উল্লেখ্য থাকে যে, বহুল আলোচিত এমএলএম ব্যবসা ব্রাইট ফিউচার হোল্ডিংস লিমিটেডের এরা অনেকেই তালিকাভুক্ত আসামী।
এদের সহযোগিতায় জেনারেশন প্রপার্টিজ এন্ড ডেভলপার্স লিমিটেডের এমডি মোঃ কামাল হোসেন উক্ত ব্যবসাকে এমএলএম ব্যবসায় রূপান্তর করে নেন। অপর দুইজন মালিক মোঃ হারুন শেখ(ভিসি) ও মোঃ আঃ কাদের হাওলাদার (ডিএমডি)রূপান্তরিত এমএলএম ব্যবসা না করার সিদ্ধান্ত জানালে এ নিয়ে মালিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারনে নারী দিয়ে মোঃ হরুন শেখ (ভিসি)নামের অপর মালিক, কে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
এমএলএম ব্যবসা করে মাত্র দশ মাসে প্রায় বিশ কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশে ছেলের কাছে চার কোটি টাকা পাচার করাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে মোঃ কামাল হোসেন(এমডি’র) বিরুদ্ধে । ব্যাক্তিগত গানম্যান(বডিগার্ড),কবির বাহিনী(মাস্তান) ও একাধিক স্ত্রীর ভরণ পোষণের খরচও কোম্পানির টাকা থেকে বহন করছেন তিনি।
ব্যক্তিগত ঋণের প্রায় দেড় কোটি টাকা পরিশোধ করাসহ অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে মোঃ কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে। শুকোম্পানির শুরুতে মোঃ হারুন শেখ ১২ শতাংশ, মোঃ আব্দুল কাদের হাওলাদার ১২ শতাংশ ও মোঃ কামাল হোসেন ২২ শতাংশ, ভবিষ্যতে চেয়ারম্যান নেওয়া হবে সেজন্য ৫%, এই মিলে মোট ৫১% শেয়ার হয়, বাকি ৪৯% শেয়ার, হোল্ডারগনের কাছে বিক্রি করা হবে বলে তিনজন মিলে আলোচনা করে নিলেও জয়েনস্টক সনদ হাতে পাওয়ার পর জানা যায় মোঃ কামাল হোসেন নিজ নামে জালিয়াতি করে ৭৬ শতাংশ লিখে নিয়েছেন। এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকে তিনজন মালিক যৌথ অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে অন্য দুইজন মালিকের স্বাক্ষর জাল করে নিজেই একটি একাউন্ট করেছেন।
সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত এমএলএম কোম্পানি পরিচালনা করে অতি অল্প সময়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কারনে মালিক পক্ষের মোঃ হারুন শেখ ও মোঃ আব্দুল কাদের হাওলাদার বাধা দেয় ও হিসাব জানতে চাইলে মোঃ কামাল হোসেন চড়াও হয়ে তাদেরকে কোম্পানি থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়।
এবিষয়ে বিমান বন্দর থানায় আবদুল কাদের হাওলাদার চলতি মাসের ৯ তারিখে একটা সাধারণ ডায়েরি করেন। এছাড়াও মোঃ হারুন শেখ ও মোঃ আব্দুল কাদের হাওলাদার হিউম্যান রাইট্স মনিটরিং অর্গানাইজেশন মানবাধিকার সংস্থা বরাবরে গত ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখে অভিযোগ দায়ের করেন।হিউম্যান রাইট্স মনিটরিং অর্গানাইজেশনের পরিচালক তদন্ত মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান জানান, ঘটনার তদন্ত করে জেনেছি তারা এমএলএম ব্যবসা করে। ফিমার সাথে কামালের কি সম্পর্ক তা খতিয়ে দেখা হবে।তদন্ত শেষে এই অবৈধ এমএলএম ব্যবসা বন্ধের জন্য আমরা প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি পাঠাবো।
মোঃ কামাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আপনার প্রশ্নের কোন উত্তর দিব না।আপনার কাজ আপনি করেন, আমার কাজ আমাকে করতে দেন।
বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত বলেন, কোন অভিযোগকারী থাকলে পাঠিয়েদেন । ব্যবস্থা নিচ্ছি।