কুমিল্লায় খেজুরের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ দাম হাতিয়ে নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে জেলার খেজুর বিক্রেতারা অধিক মুনাফা লুটের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। রমজানের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই খেজুরের অবৈধ মজুত করে রেখেছে চক্রটি। এরই মাঝে রমজান শুরুর পর থেকে ভোক্তাদের চাহিদা বৃদ্ধির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে খেজুর বিক্রি করছে। অনেকটা বাধ্য হয়েই অধিক মূল্যে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইফতারে খাওয়ার জন্য খেজুর ক্রয় করছেন।
জানা গেছে, পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে জেলার অর্ধশতাধিক মৌসুমী ব্যবসায়ী খেজুর মজুত করে থাকে। প্রতি রমজানের আগে জেলার চকবাজার, পদুয়ার বাজার, বাদশা মিয়ার বাজার, ময়নামতি, চান্দিনা, কংশনগর, গৌরীপুর বাজার, দেবিদ্বার, কোম্পানীগঞ্জ, মুরাদনগর, বাঙ্গরা, রামচন্দ্রপুর, চৌদ্দগ্রাম ও লাকসামের অর্ধশতাধিক মৌসুমী ব্যবসায়ী তাদের গুদামে খেজুরের মজুত করে রাখে। রমজান শুরু হলে এসব মজুদদার বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করে। এতে হাতবদলের মাধ্যমে খুচরা ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কাছ থেকে দুই-তিনগুণ দাম হাতিয়ে নেয়।
সরেজমিন নগরীর চকবাজার ও রাজগঞ্জ ফল মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, খুচরা ব্যবসায়ীরা নিুমানের খেজুর বিক্রি করছে ২৮০ টাকায়- যা রমজানের আগে ১৪০ টাকায় বিক্রি হতো। ৮০০ টাকার মারিয়াম বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকায়। ২০০ টাকার বড়ই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। ২৫০ টাকার সুক্কারি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। এমনভাবে সব ধরনের খেজুরে দুই থেকে তিনগুণ দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।
রাজগঞ্জের খুচরা ব্যবসায়ী হোসেন সরকার, বিল্লাল মিয়া, আবু ইউসুফ বলেন, দাম বৃদ্ধিতে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা কেজিতে ২০-৩০ টাকা লাভ করি। মূল লাভ চুষে খায় মজুদদাররা। তারা বলেন, নগরীর চকবাজার বাদশা মিয়ার বাজারসহ জেলার প্রতিটি বাজারে রয়েছে খেজুরের অবৈধ মজুদদার। তারা রমজানে দুই থেকে তিন মাস আগে নিজস্ব গুদামে বিপুল পরিমাণ খেজুর মজুত করে রেখেছে। রমজান আসার সঙ্গে সঙ্গে খেজুরের দাম দুই থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে বিক্রি করছে।
বাদশা মিয়ার বাজারের ভোক্তা ইমরান হোসেন, সালেহ আহমদ, কামাল হোসেন বলেন- রমজানের এক সপ্তাহ আগেও খেজুরের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে ছিল। কিন্তু রোজার একদিন আগে থেকেই খেজুরের মূল্য দুই থেকে তিনগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এতে আমাদের ভালো খেজুর ক্রয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন এসব অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিদিনই পৃথক পৃথক স্থানে অভিযান পরিচালনা করছি। বিশেষ করে ফলের বাজারগুলোতে আমাদের আলাদা নজরদারি রয়েছে। সিন্ডিকেট শনাক্ত করতে পারলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।