টারজানের গল্প হয়তো আমরা কম বেশি জানি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে মানুষের আবাসস্থল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জঙ্গলে বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছিল। এমনি একটি ঘটনার সন্ধান মিলিয়েছে ইউক্রেনে।
ইউক্রেনের ওক্সানা মালায়া (৪০) নামের এক নারী জানিয়েছেন, কুকুরের সঙ্গে তিনি শৈশব কাটিয়েছেন এবং তাদের মতো করেই চলাফেরা করেন। খবর উইওয়ানের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওক্সানা মালায়াকে মাত্র তিন বছর বয়সে তার মদ্যপ বাবা-মা ঠান্ডার মধ্যে বাইরে রেখে যান। পরে আশ্রয়ের জন্য তিনি তার পোষা কুকুরটিকে অনুসরণ করে একটি গর্তে যান এবং প্রায় পাঁচ বছর ধরে সেখানে কুকুরের দলের সঙ্গে থাকেন।
এই সময় ওক্সানা মালায়া ঘেউ ঘেউ করা, গর্জন করা এবং হাত-পা ব্যবহার করে হাঁটার কৌশল রপ্ত করেন।
মালায়া বলেন, ‘আমার অনেক ভাইবোন ছিল এবং আমাদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত বিছানা ছিল না। তাই আমি কুকুরের কাছে গিয়েছিলাম এবং তার সঙ্গে থাকতে শুরু করি। বেঁচে থাকতে আমি সেখানে নিজের থাকার জন্য একটি বাড়ি তৈরি করেছিলাম এবং জীবনের পরবর্তী পাঁচ বছর সেখানে থেকেছিলাম।’
এই ইউক্রেনীয় ওই নারী বলেন, ‘যখন আমাকে উদ্ধার করা হয়, তখন কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমি তাদের (কুকুর) সঙ্গে কথা বলতে চাই, ঘেউ ঘেউ করতে চাই। এটাই ছিল আমাদের যোগাযোগের উপায়। কুকুরদের মতো করে কাঁচামাংস খেতাম, খাবারের জন্য আবর্জনার আশপাশে ঘোরাঘুরি করতাম।’
মালায়া বর্তমানে যেই পরিচর্যাকেন্দ্রে থাকেন, সেখানকার পরিচালক আন্না চালায়া বলেন, ‘মালায়া একটি মানব শিশু নয়; বরং একটি ছোট কুকুর ছানার মতো ছিল। তিনি যখন পানি দেখতেন, তখন তার জিহ্বা বের করতেন এবং জিহ্বা দিয়েই পানি খেতেন।’
উদ্ধারের পর মালায়াকে দুই পায়ে হাঁটা এবং কথা বলা শেখানো হয়। তার পরও সে এখনো কুকুরের কিছু আচরণ ধরে রেখেছে। মালায়ার সঙ্গে তার বাবা-মায়ের সাক্ষাৎ হয় একুশ শতকের শুরুর দিকে।
শিশু মনোবিজ্ঞানী লিন ফ্রাই মালায়া সম্পর্কে বলেন, ‘আমি মনে করি না যে সে কখনো পড়তে বা অন্য কিছু করতে পারবে, যা ভবিষ্যতে তার কাজে লাগবে।’