মাসুদ পারভেজ (উত্তরা):উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়কে যানজট নিরসনে দায়িত্বরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে দুপুরের খাবার বিতরণ করা হয়। রবিবার দুপুর ১ ঘটিকা হইতে ইনকিলাব এন্টারপ্রাইজ এন্ড পাবলিকেশন্স লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষ থেকে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়কে গত ৫ দিন যাবত যানজট নিরসনে নিরলসভাবে দায়িত্বরত শিক্ষার্থীদের মাঝে দুপুরের খাবার ও পানি বিতরণ করা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দলোনের তোপের মুখে পরে গত ৫ই আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এপর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়কে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করে আসছে। শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে মুগ্ধ গণমানুষের মুখপাত্র দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদির পক্ষে লেখনীর মাধ্যমে উৎসাহ দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ায়।
সরকার পতনের পর পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘোষণা দিয়ে কর্মবিরতিতে চলে যায়। এর ফলে সারা দেশের ন্যায় বিমানবন্দর মহাসড়ক সড়কে যানচলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের বিশৃঙ্খলা এড়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ডাকে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা যার যার নিজ এলাকায় দলবলসহ কাজে নেমে পড়ে।
কোন ধরণের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই এমন চ্যালেঞ্জিং জবে নেমে পড়া এবং এটিকে মোকাবিলা করা ছাত্রদের এমন উদারতা ও সাহসিকতা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কে ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াই যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সারাদেশে পুলিশ সদস্যরা কর্ম বিরতি ঘোষণা করেন। এতে বিমানবন্দর মহাসড়কসহ উত্তরার কোন সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দেখা মিলেনি। সরেজমিনে দেখা যায়, এখানকার শাখা রোডের পাশাপাশি গত কয়েকদিন যাবত মূল সড়কে রিক্সা, অটোরিক্সার অবাদ চলাচলের কারণে উত্তরা ৬ নং সেক্টর ও ৪ নং সেক্টরের অলিগলিতে যানজটের প্রভাব পড়েছে। এছাড়াও ১/৫/৭/১১/১৩/১৪ নং সেক্টরের অলিগলিতেও যানজট দেখা যায়।
কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে সারাদেশে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা শহিদ হওয়ার ঘটনায় ছাত্ররা উত্তরার সকল ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এবং কিছু কিছু ট্রাফিক বক্স আগুন লাগিয়ে পুরিয়ে দেয়। পাশাপাশি উত্তরা পূর্বথানা ও খিলখেত থানায় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা আগুন লাগিয়ে দেয়। ঢাকা ময়মনসিংহ বিমানবন্দর মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় উত্তরা আব্দুল্লাহপুর থেকে উত্তরখান হয়ে তের মুখ, হাউজ বিল্ডিং থেকে জমজম টাওয়ার হয়ে খালপাড় দিয়াবাড়ী, উত্তরা রাজউক মডেল কলেজ সড়ক,নবাব হাবিবউল্লাহ কলেজ রোড, আজমপুর সড়ক হয়ে পাসপোর্ট অফিস সড়ক, জসিম উদ্দিন সড়ক থেকে বিমানবন্দর গোলচক্কর হয়ে খিলখেত নিকুঞ্জ কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় যানজট নিরসনে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী দায়িত্ব পালন করছে। সড়কের বিশৃঙ্খলা ও যানজট এড়াতে এসময় ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে নামেন উত্তরা ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, এপিবিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা হাইস্কুল এন্ড কলেজসহ উত্তরার বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার সহস্রাধিক শিক্ষার্থীরা। জীবন বাজি রাখা ছাত্রদের পাশাপাশি স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরাও সড়কের ময়লা আবর্জনা পরিস্কার ও ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করেন। সরেজমিনে আরো দেখা যায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও উত্তরার বিভিন্ন সড়কে পড়ে থাকা ইট পাথরের টুকরা,বাঁশ কাঠের টুকরা,গাছের ঢাল-পালাসহ ময়লার স্তুপ পরিস্কার করতেও দেখা যায়। সেক্টর এলাকা ছাড়াও পাড়া মহল্লার মসজিদ মন্দির পাহাড়ার পাশাপাশি সরকারি স্থাপনা জাতীয় সম্পদ, শহীদ মিনার ও জাতীয় সংসদ ভবন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে দেখা যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা “মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচিতে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।