গোপালগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলা মীমাংসাকালে স্ত্রীর পক্ষের লোকজনের হামলায় মারপিটের শিকার হয়েছেন মামা-ভাগ্নে। রোববার বিকালে গোপালগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে অ্যাডভোকেটদের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, মাদারীপুর জেলার মোস্তফাপুরের অমল মালো (৫৫) ও গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরের দিগনগর গ্রামের শিবু মালো (৩০)। তারা দুজন সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে।
ওই দিন সন্ধ্যায় আহত অমল মালোকে গুরুতর অবস্থায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী অমল মালো বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিকটিম শিবু মালোর চাচাতো ভাই পরিতোষ মালো বলেন, চার বছর আগে তার চাচাতো ভাই জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামের জুরান মালোর ছেলে শিবু মালোর সঙ্গে সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের রঞ্জন বিশ্বাসের মেয়ে শ্রাবনী বিশ্বাসের বিয়ে হয়। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ-বিবাদ দেখা দেয়। তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। চার মাস আগে স্বামী ও পরিবারের লোকজনদের না জানিয়ে শিবু মালোর স্ত্রী শ্রাবনী বিশ্বাস ঢাকায় চলে যায়। ১০ দিন পরে শ্রাবনী আবার ঢাকা থেকে তার বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জে চলে আসেন।
এ পরিস্থিতিতে শ্রাবনীর আত্মীয় সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কর ও মুকসুদপুরের বাটিকামারী ইউনিয়নের মেম্বার ও শিবু মালোর প্রতিবেশী ফায়েক সিকদার দুপক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেন। পরে শ্রাবনীকে বুঝিয়ে আবারো স্বামীর বাড়িয়ে পাঠিয়ে দেন; কিন্তু এর কয়েক দিন পরেই শ্রাবনী তার বাবার বাড়িতে দ্বিতীয় দফায় আবার চলে যায় এবং তার স্বামী শিবু মালোর বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জে আদালতে একটি যৌতুকের মামলা করেন।
মামলা শুনানির দিন দুপক্ষের আইনজীবীদের আপস-মীমাংসার শর্তে আদালত তাকে জামিন দেন। সেই অনুযায়ী রোববার বিকালে আইনজীবী সমিতির ভবনের অ্যাডভোকেটদের কক্ষে দুপক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে আপস-মীমাংসার বৈঠক শুরু হয়।
আলোচনার একপর্যায় বাটিকামারী ইউপির মেম্বার ফায়েক সিকদার ছেলের পক্ষে কথা বলতে গেলে মেয়েপক্ষের লোকজন তাকে থামিয়ে দেন। এতে দুপক্ষ কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়লে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায় শ্রাবনীর মামা কমল মালো ও মিন্টু মালোর নেতৃত্বে তাদের লোকজন শিবু মালো ও তার মামা আমর মালোকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেন।
শ্রাবনী বিশ্বাসের আত্মীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, অভিযোগ এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।